Why HEART ATTACKS Happen

Why HEART ATTACKS happen:হার্ট অ্যাটাক, বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, এমন একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি যা সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হলো হৃদয়ের একটি অংশে পর্যাপ্ত রক্ত ​​এবং অক্সিজেন পৌঁছাতে না পারা। কিন্তু কী কারণে এত কম বয়সে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, এই সমস্যাটি বেড়ে চলেছে? আজ আমরা হার্ট অ্যাটাকের পিছনে থাকা বিজ্ঞান, কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

হার্টের কার্যপ্রণালী: হৃদয়ের কিভাবে কাজ করে?

হার্ট আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা সারা শরীরে রক্ত ​​পাম্প করে। এই রক্ত ​​শরীরে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে, যা শরীরের সঠিক কার্যপ্রণালীর জন্য অপরিহার্য। হৃৎপিণ্ডের প্রধান পাম্পিং চেম্বার হলো বাম ভেন্ট্রিকল, যা অক্সিজেনযুক্ত রক্তকে আওটা নামক প্রধান ধমনীর মাধ্যমে সারা শরীরে প্রবাহিত করে। আওটা ধমনী থেকে রক্তের ক্ষুদ্র ধমনীগুলোর মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছায়। এই ধমনীগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো করোনারি ধমনী, যা সরাসরি হৃদয়ে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত ​​সরবরাহ করে।

হৃৎপিণ্ডে রক্ত ​​প্রবাহের গতি এবং প্রক্রিয়া

হৃৎপিণ্ড একটি অত্যন্ত কার্যকর পাম্পিং মেশিন। যখন রক্ত ​​শরীরের মধ্যে প্রবাহিত হয়, তখন শরীরের প্রতিটি অংশ অক্সিজেন এবং পুষ্টি পায়। যদি এই প্রক্রিয়ায় কোনো বাধা সৃষ্টি হয়, তবে শরীরের নির্দিষ্ট অংশে রক্ত ​​প্রবাহ কমে যায়। এই ব্লকেজ যদি হৃদয়ে হয়, তবে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে।

Why HEART ATTACKS Happen?

হার্ট অ্যাটাকের কারণ: কেন ব্লকেজ ঘটে?

হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হলো করোনারি ধমনীগুলোর মধ্যে রক্ত ​​প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়া। এই বাধা প্রধানত প্লাক নামক এক ধরনের পদার্থ জমে তৈরি হয়। প্লাকের গঠন বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে হয়, যেমন কোলেস্টেরল, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম এবং শরীরের অন্যান্য পদার্থ। এই প্লাক ধমনীর ভেতরে জমে ধমনী সংকুচিত করে, যার ফলে রক্ত ​​প্রবাহ কমে যায়। একে আংশিক ব্লকেজ বলা হয়।

প্লাকের বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং রক্ত জমাট বাঁধা

যখন প্লাকটি ধমনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন সেখানে রক্ত ​​জমাট বাঁধতে শুরু করে। এই রক্তের জমাট বাঁধার ফলে ধমনী আরও সংকীর্ণ হয়, এবং একসময় সম্পূর্ণ ব্লকেজের সৃষ্টি হয়। এর ফলে হৃদয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত ​​পৌঁছানো বন্ধ হয়ে যায়, এবং সেই অংশটি ধীরে ধীরে মারা যায়। এভাবেই হার্ট অ্যাটাক ঘটে।

অন্যান্য কারণ: করোনারি আর্টারি স্প্যাজম এবং করোনারি আর্টারি ডিসেকশন

হার্ট অ্যাটাকের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। যেমন:

  1. করোনারি আর্টারি স্প্যাজম: ধূমপান, ঠান্ডা বাতাস বা অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ধমনীগুলো সংকুচিত হতে পারে, যার ফলে রক্ত ​​প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
  2. করোনারি আর্টারি ডিসেকশন: এ ধরনের অবস্থায় ধমনীর অভ্যন্তরীণ প্রাচীর আলাদা হয়ে যায়, এবং রক্ত ​​চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে হৃদয় পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না, এবং এটি কার্যকরী হওয়া বন্ধ করে দেয়।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ: কীভাবে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে?

হার্ট অ্যাটাকের সময় মানুষের শ্বাসকষ্ট হয় এবং বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করে। এই ব্যথা কখনও কখনও শরীরের অন্যান্য অংশে, যেমন কাঁধ, হাত, পিঠ, ঘাড়, চোয়াল, দাঁত, এবং পেটের উপরের অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হার্ট অ্যাটাকের সময় সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা যায়:

  1. বুকে ব্যথা বা চাপ
  2. শ্বাসকষ্ট
  3. মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
  4. ঘামাচি
  5. ক্লান্তি বা দুর্বলতা
  6. হাতের আঙুল বা চোয়ালের ব্যথা

এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবিলম্বে মেডিকেল সহায়তা নেওয়া উচিত, কারণ হার্ট অ্যাটাক সময়মতো চিকিৎসা না পেলে প্রাণঘাতী হতে পারে।

হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ানোর কারণ

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমন কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  1. ধূমপান: ধূমপান সরাসরি হার্টের রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করে, যার ফলে প্লাক জমে।
  2. মোটা হওয়া: শরীরের অতিরিক্ত ওজন করোনারি ধমনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং রক্তচাপ বাড়ায়।
  3. উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ ধমনীর ক্ষতি করে এবং ব্লকেজের সম্ভাবনা বাড়ায়।
  4. কোলেস্টেরল: রক্তের উচ্চ কোলেস্টেরল প্লাক জমার অন্যতম কারণ।
  5. ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  6. ব্যায়ামের অভাব: নিয়মিত ব্যায়াম না করার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি এবং রক্ত ​​প্রবাহে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

জীবনধারা পরিবর্তন

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে আমাদের জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। যেমন:

  1. ধূমপান ত্যাগ করা
  2. নিয়মিত ব্যায়াম করা
  3. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা, যেমন কম চর্বিযুক্ত এবং পুষ্টিকর খাদ্য
  4. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
  5. নিয়মিত রক্তচাপ এবং
  6.  কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস

সুস্থ হৃদয় রাখতে পুষ্টিকর এবং ব্যালেন্সড খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য। নিচের কিছু খাদ্য উপাদান হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক হতে পারে:

    1. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: মাছ, বিশেষ করে স্যামন এবং ম্যাকেরেল হার্টের জন্য উপকারী।
    2. ফল ও শাকসবজি: ফল এবং সবজি ফাইবার সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
    3. বাদাম: বাদাম হার্টের জন্য উপকারী চর্বি এবং প্রোটিন সরবরাহ করে।
    4. পুরো শস্য: ব্রাউন রাইস, ওটস ইত্যাদি শস্য খাবারে যোগ করুন।
    5. অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উত্স যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

চিকিৎসা: হার্ট অ্যাটাকের সময় করণীয়

হার্ট অ্যাটাকের সময় প্রাথমিক চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত:

  1. রোগীকে অবিলম্বে বসাতে হবে এবং শান্ত রাখতে হবে।
  2. যদি রোগীর আগের হার্টের সমস্যা থাকে এবং ডাক্তার অ্যাসপিরিন বা নিট্রোগ্লিসারিন প্রেসক্রাইব করে থাকেন, তবে তা গ্রহণ করা উচিত।
  3. অবিলম্বে ১০২ নম্বরে কল করে অ্যাম্বুলেন্স ডাকা উচিত।
  4. যদি রোগীর শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, তবে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (CPR) শুরু করা উচিত।

বর্তমান পরিস্থিতি: তরুণদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের বৃদ্ধি

বর্তমান সময়ে, হার্ট অ্যাটাক কেবল বয়স্কদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক মেডিকেল গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে ৫০ বছরের আগে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। ৪০ বছর বয়সের মধ্যে ২৫ শতাংশ মানুষ হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই কারণেই কেন এত কম বয়সে হার্ট অ্যাটাক ঘটছে, সে সম্পর্কে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করব।

World Heart Day 2024 – কি কি সেরা উপায় হৃদয় সুস্থ রাখা যায়?

সাম্প্রতিক আরো খবর, চাকরি এবং অন্যান্যথ্যের জন্য আমাদের WhatsApp চ্যানেল অনুসরণ করুন


Discover more from Infodata News

Subscribe to get the latest posts sent to your email.