Kaushiki Amavasya 2025 Date: ভাদ্র মাসের শেষের দিকে আসছে কৌশিকী অমাবস্যা, যাকে অনেকে কুশাগ্রহণী অমাবস্যা বা পিঠোরী অমাবস্যা নামেও চেনেন। এই বিশেষ দিনটি হিন্দু ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অমাবস্যায় পিতৃপুরুষদের তর্পণ, মা কালীর পুজো এবং তন্ত্রসাধনার মতো কাজ করলে শুভ ফল পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। চলুন, জেনে নিই এই দিনটি কবে পালিত হবে এবং এর মাহাত্ম্য কী।
Kaushiki Amavasya 2025 Date: কবে পড়ছে কৌশিকী অমাবস্যা?
Kaushiki Amavasya 2025 Date, ২০২৫ সালে কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হবে ২২ অগাস্ট, শুক্রবার। পঞ্জিকা অনুযায়ী, অমাবস্যা তিথি শুরু হবে ৫ ভাদ্র, শুক্রবার সকাল ১১:৫৫-এ এবং শেষ হবে ৬ ভাদ্র, শনিবার সকাল ১১:২৪-এ। এই সময়ে বিশেষ পুজো ও ধর্মীয় কাজ করার জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা ( Kaushiki Amavasya 2025 Date)
অমাবস্যা তিথি শুরু হবে ২২ অগাস্ট, শুক্রবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে এবং সমাপ্ত হবে ২৩ অগাস্ট শনিবার বেলা ১১টা ৩৭ মিনিটে।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা ( Kaushiki Amavasya 2025 Date)
২২ অগাস্ট শুক্রবার বেলা ১১টা ৫৪ মিনিট ১৭ সেকেন্ড থেকে অমাবস্যা তিথি শুরু হবে। শেষ হবে ২৩ অগাস্ট বেলা ১২টা ২২ মিনিট ৪২ সেকন্ডে।
কেন বলা হয় কৌশিকী অমাবস্যা?
তন্ত্রশাস্ত্রে এই দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, এই তিথিতে দেবী কৌশিকী অশুভ শক্তি ধ্বংস করেন এবং শুভ শক্তির সঞ্চার করেন। তারাপীঠে এই দিনে মা তারার বিশেষ পুজো হয়, যাকে অনেকে ‘তারা রাত’ বলেও ডাকেন। এই রাতে তন্ত্রসাধনা করা হয় এবং ভক্তরা মা তারার কাছে মনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বলা হয়, এই পুজো মনোবাঞ্ছা পূরণে সাহায্য করে।
কৌশিকী অমাবস্যার ইতিহাস
কৌশিকী অমাবস্যা, যা কুশাগ্রহণী অমাবস্যা বা পিঠোরী অমাবস্যা নামেও পরিচিত, হিন্দু ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তিথিতে পালিত এই দিনটি ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক এবং তান্ত্রিক ক্রিয়াকলাপের জন্য বিশেষভাবে পবিত্র। এর ইতিহাস পুরাণ, তন্ত্রশাস্ত্র এবং লোকপ্রথার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। চলুন, জেনে নিই কৌশিকী অমাবস্যার ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক পটভূমি।
পৌরাণিক উৎস
কৌশিকী অমাবস্যার নামটি এসেছে দেবী কৌশিকীর নাম থেকে। পুরাণ অনুসারে, দেবী কৌশিকী হলেন দেবী দুর্গার একটি রূপ। মার্কণ্ডেয় পুরাণে বর্ণিত ‘দেবী মাহাত্ম্য’-এ দেবী কৌশিকীর উল্লেখ পাওয়া যায়। এই পৌরাণিক কাহিনীতে বলা হয়, দেবী দুর্গা অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিজের শক্তির একটি অংশ থেকে কৌশিকী রূপ সৃষ্টি করেছিলেন। এই রূপ অশুভ শক্তি ধ্বংস করার জন্য বিশেষভাবে শক্তিশালী। ভাদ্র মাসের অমাবস্যায় এই দেবীর আরাধনা করা হয়, কারণ এই দিনে তাঁর শক্তি সবচেয়ে প্রবল বলে বিশ্বাস করা হয়।
তন্ত্রশাস্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক
কৌশিকী অমাবস্যার তাৎপর্য তন্ত্রশাস্ত্রে আরও গভীর। এই দিনটি তান্ত্রিক সাধনার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তারাপীঠে এই দিনে মা তারার পুজো বিশেষভাবে পালিত হয়। মা তারা, যিনি দেবী কৌশিকীর আরেকটি রূপ হিসেবে বিবেচিত, তন্ত্রসাধকদের কাছে অত্যন্ত পূজনীয়। এই দিনে তারাপীঠে ‘তারা রাত’ পালিত হয়, যেখানে সাধকরা গভীর রাতে তান্ত্রিক সাধনা ও পুজো করেন। বিশ্বাস করা হয়, এই রাতে মা তারার কৃপায় মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করা যায়।
পিতৃপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা
কৌশিকী অমাবস্যার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল পিতৃপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। হিন্দু ধর্মে অমাবস্যা তিথি সাধারণত পিতৃকর্মের জন্য উৎসর্গীকৃত। এই দিনে পিতৃ তর্পণ ও শ্রাদ্ধকর্ম করা হয়। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, এই তিথিতে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করলে পিতৃদোষ দূর হয় এবং তাঁদের আত্মা শান্তি লাভ করে। এই প্রথা প্রাচীন বৈদিক যুগ থেকে চলে আসছে এবং কৌশিকী অমাবস্যায় এটি বিশেষভাবে পালিত হয়।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
ঐতিহাসিকভাবে, কৌশিকী অমাবস্যা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন নামে ও রীতিতে পালিত হয়ে আসছে। উত্তর ভারতে এটি পিঠোরী অমাবস্যা নামে পরিচিত, যেখানে বিশেষ করে গৃহস্থরা পুজো ও দান-ধর্মের মাধ্যমে এই দিনটি পালন করেন। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশার মতো অঞ্চলে তান্ত্রিক প্রথার প্রভাব বেশি দেখা যায়। মধ্যযুগে তন্ত্রশাস্ত্রের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এই দিনটি তান্ত্রিক সাধনার জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তারাপীঠ, কামাখ্যা এবং অন্যান্য তান্ত্রিক তীর্থক্ষেত্রে এই দিনে ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে।
লোকপ্রথা ও সংস্কৃতি
কৌশিকী অমাবস্যার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বিভিন্ন লোকপ্রথা। গ্রামীণ ভারতে এই দিনে কুশ (এক ধরনের পবিত্র ঘাস) সংগ্রহ করা হয়, যা শ্রাদ্ধকর্মে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে এই দিনটিকে কুশাগ্রহণী অমাবস্যাও বলা হয়। এছাড়া, এই দিনে গঙ্গা স্নান, দান-ধর্ম এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের প্রথা শতাব্দী ধরে চলে আসছে।
আধুনিক সময়ে কৌশিকী অমাবস্যা
আজও কৌশিকী অমাবস্যা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পালিত হয়। তারাপীঠের মতো তীর্থক্ষেত্রে এই দিনে লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমবেত হন। আধুনিক সময়ে, তান্ত্রিক সাধনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এই দিনে পুজো, তর্পণ এবং দানের মাধ্যমে ধর্মীয় কাজ সম্পন্ন করেন। এই দিনটি আধ্যাত্মিক শুদ্ধি এবং পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কৌশিকী অমাবস্যা শুধু একটি ধর্মীয় দিন নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতি, পৌরাণিক বিশ্বাস এবং তান্ত্রিক ঐতিহ্যের একটি সুন্দর মেলবন্ধন। এই দিনের ইতিহাস আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ দেখায়।
কীভাবে পালন করবেন এই দিন?
কৌশিকী অমাবস্যায় কিছু সহজ ধর্মীয় কাজ করা যায়, যা আপনি বাড়িতেও করতে পারেন:
-
পিতৃ তর্পণ: পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করুন। এটি পিতৃদোষ দূর করতে সাহায্য করে।
-
মা কালী বা তারার পুজো: মা কালী বা তারার পুজো করুন। বাড়িতে সহজ নিয়মে পুজো করতে পারেন, যেমন ফুল, ধূপ, প্রদীপ দিয়ে আরাধনা।
-
দান-ধর্ম: এই দিনে দান করা শুভ। গরিবদের খাবার, কাপড় বা অর্থ দান করতে পারেন।
-
গঙ্গা স্নান: সম্ভব হলে গঙ্গায় স্নান করুন। এটি আধ্যাত্মিক শুদ্ধি আনে।
কৌশিকী অমাবস্যার বিশেষত্ব
Kaushiki Amavasya 2025 Date,এই দিনটি কেবল ধর্মীয় কাজের জন্যই নয়, আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে তারাপীঠে এই দিনে লক্ষ লক্ষ ভক্ত মা তারার দর্শনে ভিড় করেন। তন্ত্রসাধকদের কাছে এই রাত খুবই পবিত্র। এছাড়া, এই দিনে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে শ্রাদ্ধ বা তর্পণ করলে পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস।
কেন এই দিন পালন করবেন?
কৌশিকী অমাবস্যা কেবল একটি ধর্মীয় দিন নয়, এটি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এবং নিজের মনকে শুদ্ধ করার একটি সুযোগ। এই দিনে পুজো, দান বা তর্পণের মাধ্যমে আপনি আধ্যাত্মিক শান্তি পেতে পারেন। তাই, এই ২২ অগাস্ট, শুক্রবার, Kaushiki Amavasya 2025 Date: প্রস্তুত থাকুন এই বিশেষ দিনটি পালন করতে।
🔔 সবসময় আপডেটেড থাকুন !!!
👉 আমাদের ফলো করুন:
📰 ট্রেন্ডিং খবর | 📢 জরুরি আপডেট | 💼 নতুন চাকরির সুযোগ
🟢 হোয়াটসঅ্যাপ | 🔵 টেলিগ্রাম
🔵 লিঙ্কডইন | 🔵 থ্রেড | 🔵 ফেসবুক | 🔵 ইনস্টাগ্রাম | 🔵 টাম্বলার
Discover more from
Subscribe to get the latest posts sent to your email.