Bhoot Chaturdashi Date,ভূত চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশী হলো দীপাবলির ঠিক আগের দিনের একটি বিশেষ হিন্দু উৎসব, যা বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে পালিত হয়। এই দিনে পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং অশুভ শক্তিগুলোকে দূর করার জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান করা হয়। ২০২৫ সালে এই উৎসবের তারিখ ও সময় নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি থাকলেও, পঞ্জিকা অনুসারে এটি ২০ অক্টোবরকে প্রধানত পালিত হবে। আসুন, এই উৎসবের বিভিন্ন দিক জেনে নিই।
কোন দিন ভূত চতুর্দশী / Bhoot Chaturdashi Date?
ভূত চতুর্দশী কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়, যা সাধারণত দীপাবলির একদিন আগে পড়ে। ২০২৫ সালে চতুর্দশী তিথি ১৯ অক্টোবর দুপুর ১:৫১ থেকে শুরু হয়ে ২০ অক্টোবর দুপুর ৩:৪৪ পর্যন্ত চলবে।
প্রধান অনুষ্ঠান ২০ অক্টোবর (সোমবার) সূর্যোদয় থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত করা হয়, যদিও কিছু স্থানে ১৯ অক্টোবরের সন্ধ্যায়ও শুরু হতে পারে। এটি কালীপূজার ঠিক আগের দিন এবং ছোট দীপাবলির সঙ্গে যুক্ত।
চতুর্দশী তিথি শুরু – ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, দুপুর ১টা ৫১ মিনিট
চতুর্দশী তিথি শেষ – ২০ অক্টোবর, ২০২৫, দুপুর ৩টা ৪৪ মিনিট
Bhoot Chaturdashi/ভূত চতুর্দশীর ধারণা কী?
ভূত চতুর্দশীর ধারণা হলো এই দিনে ১৪ জন পূর্বপুরুষের আত্মা তাদের বংশধরদের কাছে ফিরে আসেন। তাঁদেরকে স্বাগত জানাতে এবং সন্তুষ্ট করতে ঘরের প্রত্যেক কোণে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। এটি অশুভ শক্তি, ভূত-প্রেত এবং নেতিবাচক এনার্জিকে দূর করে ঘরে ইতিবাচকতা আনার উদ্দেশ্যে পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে এটি মা চামুন্ডা, যমরাজ, শিব এবং কৃষ্ণের পূজার সঙ্গে যুক্ত, যা অশুভ বলকে ধ্বংস করে।
Bhoot Chaturdashi,ভূত চতুর্দশীতে কতগুলো প্রদীপ জ্বালাতে হয়?
ভূত চতুর্দশীতে ঠিক ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। এগুলো ঘরের অন্ধকার কোণগুলোতে স্থাপন করা হয়, যাতে পূর্বপুরুষদের পথ দেখানো যায় এবং অশুভ শক্তি দূর হয়। সন্ধ্যাকালে বা প্রদোষকালে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হয়।
ভূত চতুর্দশী এবং নরক চতুর্দশী কি একই?
হ্যাঁ, ভূত চতুর্দশী এবং নরক চতুর্দশী মূলত একই উৎসব। অন্যান্য রাজ্যে এটি নরক চতুর্দশী নামে পরিচিত, যেখানে নরকাসুরের পরাজয়ের কথা স্মরণ করা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ভূত চতুর্দশী নামে এটি পূর্বপুরুষদের স্মরণ এবং ভূত-প্রেত দূরীকরণের উপর জোর দেয়। দুটোতেই প্রদীপ জ্বালানো এবং অভ্যঙ্গ স্নানের রীতি একই।
Bhoot Chaturdashi/ভূত চতুর্দশীতে কী খেতে হয়?
ভূত চতুর্দশীতে ১৪ ধরনের শাক-সবজি (চদ্দো শাক) মিশিয়ে প্রস্তুত করা ভোগ দেওয়া হয়। এটি দেবতাদের নৈবেদ্য হিসেবে অর্পণ করা হয় এবং পরিবারের সদস্যরা খান। এছাড়া তিল-ঘ্রাণযুক্ত তেল দিয়ে অভ্যঙ্গ স্নানের পর সাত্ত্বিক খাবার গ্রহণ করা উচিত।
ভূত চতুর্দশীতে কী করতে হয়?
এই দিনে সকালে অভ্যঙ্গ স্নান করে পূজা শুরু করুন। সন্ধ্যায় ১৪টি প্রদীপ জ্বালান, পূর্বপুরুষদের প্রণাম করুন এবং মা কালী, যমরাজ, শিব ও কৃষ্ণের পূজা করুন। রাতে মা চামুন্ডার আরাধনা করা হয়। শিশুদের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ, কারণ এদিন তান্ত্রিক সাধনা হয় বলে বিশ্বাস। এসব করে অশুভ শক্তি দূর করুন এবং পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ লাভ করুন।
নরক চতুর্দশীতে কোন ফল ভাঙতে হয়?
নরক চতুর্দশীতে (যা ভূত চতুর্দশীরই অংশ) নির্দিষ্ট কোনো ফল ভাঙার রীতি সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে কিছু ঐতিহ্যে নরকাসুরের প্রতীকী ধ্বংসের জন্য নারকেল ভাঙা হয়। এটি অশুভের বিনাশের প্রতীক। তবে পশ্চিমবঙ্গের রীতিতে এর উপর জোর কম।
চতুর্দশীর উপকার কী কী?
চতুর্দশী পালনের উপকার হলো অকাল মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া (যম দীপ দানের মাধ্যমে), পূর্বপুরুষদের তৃপ্তি, ঘর থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর হওয়া এবং ইতিবাচক এনার্জির প্রবেশ। এটি সমৃদ্ধি, শান্তি এবং পারিবারিক সৌহার্দ্য বাড়ায়।
নরক চতুর্দশীতে কোন রঙ পরতে হয়?
নরক চতুর্দশীতে লাল বা কমলা রঙের পোশাক পরা উচিত, কারণ এগুলো শুভ এবং অশুভ বিরোধী বলে বিবেচিত। লাল রঙ মা কালীর প্রতীক এবং শক্তির উদ্দীপক।
নরক চতুর্দশীতে কতগুলো প্রদীপ জ্বালাতে হয়?
নরক চতুর্দশীতে মূলত ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়, যা ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে মিলে যায়। এছাড়া যমরাজের দিকে একটি প্রদীপ দক্ষিণমুখী করে জ্বালানো হয় অকাল মৃত্যু রোধের জন্য।
দীপাবলীতে কোন রঙ শুভ?
দীপাবলীতে সোনালি, লাল এবং কমলা রঙ শুভ বলে মনে করা হয়। এগুলো সমৃদ্ধি, শুভকামনা এবং ইতিবাচকতার প্রতীক। পোশাক বা সাজসজ্জায় এই রঙগুলো ব্যবহার করলে লক্ষ্মীর আশীর্বাদ লাভ হয়।
ভূত চতুর্দশীতে দিয়া কখন জ্বালাতে হয়?
ভূত চতুর্দশীতে দিয়া (প্রদীপ) সন্ধ্যাকালে বা প্রদোষকালে জ্বালাতে হয়, অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর। ২০ অক্টোবর ২০২৫-এর সন্ধ্যায় এটি করা উচিত, যাতে অন্ধকার দূর হয় এবং পূর্বপুরুষরা পথ খুঁজে পান।
Bhoot Chaturdashi Date ,Time: ভূত চতুর্দশীর সময় কত?
২০২৫ সালে ভূত চতুর্দশীর সময় চতুর্দশী তিথির সঙ্গে যুক্ত: ১৯ অক্টোবর দুপুর ১:৫১ থেকে ২০ অক্টোবর দুপুর ৩:৪৪ পর্যন্ত। প্রধান অনুষ্ঠান ২০ অক্টোবরের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, বিশেষ করে সন্ধ্যায়।
কেন এটাকে ভূত চতুর্দশী বলা হয়?
এটাকে ভূত চতুর্দশী বলা হয় কারণ এই দিনে ভূত-প্রেত বা অশুভ আত্মাগুলো সক্রিয় হয় বলে বিশ্বাস। ১৪টি প্রদীপ জ্বালিয়ে এদের দূর করা হয় এবং পূর্বপুরুষদের স্বাগত জানানো হয়। ‘ভূত’ শব্দটি অশুভ শক্তির প্রতীক, যা এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে।
ভূত চতুর্দশীর ভূতগুলো কী কী?
ভূত চতুর্দশীতে ‘ভূত’ বলতে মূলত ১৪ জন পূর্বপুরুষের আত্মা বোঝানো হয়, যাঁরা পরিবারে ফিরে আসেন। এছাড়া এটি নেতিবাচক শক্তি, প্রেতাত্মা এবং অশুভ প্রভাবকেও নির্দেশ করে। তান্ত্রিক সাধনায় জড়িত ভূত-প্রেতের কারণে শিশুদের সুরক্ষা নেওয়া হয়। প্রদীপ জ্বালানো এসবকে দূর করে শান্তি আনে।
ভূত চতুর্দশী আমাদের সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে, যেখানে আলোর মাধ্যমে অন্ধকারকে জয় করা হয়। এই উৎসব পালন করে আপনারও ঘরে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনুন!
👉 আমাদের ফলো করুন:
📰 ট্রেন্ডিং খবর | 📢 জরুরি আপডেট | 💼 নতুন চাকরির সুযোগ
🟢 হোয়াটসঅ্যাপ | 🔵 টেলিগ্রাম
🔵 লিঙ্কডইন | 🔵 থ্রেড | 🔵 ফেসবুক | 🔵 ইনস্টাগ্রাম | 🔵 টাম্বলার
Discover more from
Subscribe to get the latest posts sent to your email.